মোঃ মাহাদি হাসান (Leather 17) এর ঘটনা
১০ মার্চ, ২০১৯
আমি যদি জানতাম যে আমার সাধারন কুয়েট জীবন কি বিভিষিকাময় হয়ে উঠতে যাচ্ছে, আমি নিজেও হয়তো বিশ্বাস করতাম না। মানুষ পশুর চেয়ে কি ভাবে নিকৃষ্ট হয় এর প্রমান আমি (মোঃ মাহাদী হাসান- লেদার-১৭) নিজেই হয়েছি।
আমার টর্চারের কয়েক মাস পরই আবরার ফাহাদের ঘটনা হয়,তখন ভেবেছিলাম, কুয়েটের আবরার ফাহাদ আমি হয়তো হয়ে যেতে পারতাম, শুধু আল্লাহ হায়াত রেখেছেন দেখে বেঁচে ফিরেছি। এই টর্চারের ট্রামা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছি।
*”আমার ঘটনায় যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিলো তাদের নামগুলো এবং তাদের নির্মম টার্চারের বর্ণনা দেওয়া হলো।”*
“টর্চারে সরাসরি জড়িতরা”
- শোভন হাসান ( প্রাক্তন ছাত্রলীগ সভাপতি) CE -10
- মাহমুদুল্লা নাবিল – URP-15 (https://www.facebook.com/mahmudullah.nabil.98…)
- সাব্বির ফয়সাল লিখন – TE -16 (https://www.facebook.com/sabbirfaisal.likhon?mibextid=ZbWKwL)
- আসাদুজ্জামান লিম – IEM-16 (https://www.facebook.com/sunno.lim.1?mibextid=ZbWKwL)
- তাহমিদ উল ইসলাম – CE -16 (Id Deactivated)
- সাকিরুজ্জামান সজিব – EEE 14
- সাগর – IEM -16 (Id Deactivated)
- নাফিস সাদিক মুইয়েব – LE-15 (https://www.facebook.com/nafissadik.muyeeb?mibextid=ZbWKwL)
- মাহবুবুর রহমান – LE- 14 (https://www.facebook.com/mahbub.hrahman?mibextid=ZbWKwL)
- তরিকুল ইসলাম তিলক – LE-14 (Id Deactivated)
- আতিকুর রহমান মাবিল – EEE -12 (https://www.facebook.com/atikur.rahman.52035?mibextid=ZbWKwL)
- কাজী শুভ – CE -15 (https://www.facebook.com/pddfggjjggjkohddgbh?mibextid=ZbWKwL) ১৭ ব্যাচ (আমাকে ধরে আনতে এবং পরবর্তিতে আমার রুম লুটপাটে ছিলো এরা।)
- রায়হান আহমেদ(171 9058) – LE -17
- সাদ আহমেদ তুর্য(1719060) – LE -17
- মাহিম মুনতাসির(1719039)- LE -17
- আহসানুজ্জামান নাহিন(1719057) – LE -17
- Redwan Khan (1719018) – LE -17 ( নিজ দ্বায়িত্ব নিয়ে আমার নিজের পিসি সে রশিদ হল ছাত্রলীগের কাছে জমা দিয়ে এসেছিলো )
- ফখরুল ইসলাম ফারিজ(1723048) – BECM -17 (https://www.facebook.com/fariz.khan.94?mibextid=ZbWKwL)
- রিফাত সানজিদ -(1723049)- BECM -17 (https://www.facebook.com/rifat.sp.9?mibextid=ZbWKwL)
- সাহরিয়ার আহমেদ সৌমিক(1723035)- BECM -17 (https://www.facebook.com/shariarahmed.ahmed.92…)
- মাসুদ(1723058) – BECM -17 (https://www.facebook.com/blockmaster6814?mibextid=ZbWKwL)
- সামি আশরাফ শৈশব – EEE -17 (https://www.facebook.com/sami.ashraf.34?mibextid=ZbWKwL)
১০ মার্চ, ২০১৯, – খুব স্বাভাবিক ভাবেই টিউশন থেকে ফিরে রাত ৮.৩০ নাগাদ রশিদ হলের ডাইনিং এ রাতের খাবার শেষ করে, লেদার ১৪ এর এক ভাইয়ের রুমে এ গিয়েছিলাম আড্ডা দিতে, রশিদ হলের ৩য় তলায়। রাত ৯.০০ টার একটু পর, নাহিন(LE-17) এর কল আসে ফোনে। ফোন ধরার পর সে আমাকে বলে, ” কই তুই, তোকে একুশ হল থেকে কেউ একজনে এসে খুজছে। আমি ৭-৫ না ভেবে জিজ্ঞেস করেছিলাম কে? সে বললো, চিনি না তবে ২-৩ বার খুজছে। কই আছস এটা বল।
পরে আমি নরমালিই বলেছিলাম, আমাদের ই হলের ৩য় তলায়, ভাইয়ের রুমে আড্ডা দিচ্ছি। ফোন কেটে দিলো”। তার ঠিক ৫ মিনিট পরেই ভাইয়ের রুমের দরজায় খুব জোরে শব্দ হয়। আমিই দরজা খুলেছিলাম, দরজা খুলে দেখি, ২০-৩০ জন দাড়িয়ে আছে দরজার বাহিরে৷ বিশেষ করে লিডে রায়হান(LE-17),তুর্য(LE-17), ফারিজ (BECM-17), রিফাত (BECM-17), শৌমিক (BECM-17),মাসুদ (BECM-17),বিল্লা (BECM-17), মাহিম (LE-17), শৈশব (EEE-17) দাড়িয়ে আছে আক্রমনাত্মক ভাব বঙ্গিতে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম কি সমস্যা? তারা বলে উঠলো তোরে গেস্ট রুমে যাইতে হবে, ১৬ এর ভাইয়েরা ডাকছে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে তারা আমাকে এক প্রকার জোর করে ৪ পাশ থেকে টহল দিয়ে রশিদ হলের গেস্ট রুমে নিয়ে আসে। গেস্ট রুমে এসে দেখি নাবিল (CE-15), লিখন (TE-16), তাহমিদ(CE-16), লিম(IEM-16), নাফিস (LE-15), সাগর (IEM-16), কাজী শুভ (CE-15), সজিব( EEE-14) সাথে রশিদ হলের ছাত্রলীগের পলিটিক্যাল আরও অনেকে ওখানে আগ থেকেই উপস্থিত। সব ধরনের স্টাম্প(১০+টি), ব্যাট(৫-৬টি), এবং জিয়াই রড(৫-৭টি) রাখা ছিলো রুমের একপাশে।
আমার ফোন নিয়ে নেওয়া হয় এক প্রকার জোর করে, এবং দিয়ে পার্সওয়াড খোলানো হয়। এরপর আমাকে প্রথমে নাফিস জিজ্ঞেস করা শুরু করলো, “শোন আমি তোর ডিপার্টমেন্ট ও হলের এর বড় ভাই, তোর সাথে আমার ভালো সম্পর্ক তোরে যা যা জিজ্ঞেস করবো সব শিকার করবি, তাইলে তোরে ছেড়ে দেয়া হবে, নাইলে এরা তোরে যা করবে তুই চিন্তাও করতে পারবি না।” আমি বললাম ভাই কিছু তো বুঝছি না। তখন আমাকে বলা হলো, আমরা এক সুত্রে খবর পাইছি তুই শিবির করস। এই জন্যে তোরে ধরে নিয়ে আসা হইছে।
তুই শিকার করে, যারে যারে চিনস তার নাম বলবি তোরে আমরা ছেড়ে দিবো। আমি বললাম যে ভাই আমি তো ভাই শিবির টিবির করি না। তখন লিখন আমাকে খুব বাজে ভাবে গালি দিয়ে বলে, “এই **** তোর মুখে দাড়ি, তোরে নামাজ পড়তে দেখি, মিথ্যা কথা বলস কেন, শিকার কর নাইলে কিন্তু খবর আছে৷” আমি বলেছিলাম, যে ভাই আমি তাবলিগের সাথে ছিলাম ভাই, আর দাড়ি রাখা তো ভাই মুসলিম হিসাবে দোষের কিছু না। ঠিক এটা বলার সাথে নাবিল এসে আমাকে অনেক জোরে থাপ্পড় দিয়ে বলে, “তোর প্যান্ট ভাজ করা, টাকনুর উপরে, তুই **** তো শিবর করস এটা বুঝাই যায় শিকার কর৷ নাইলে তোর হাড্ডি গুড্ডি কিছু আস্ত থাকবে না।”
আমি কেঁদে দিয়ে বলেছিলাম, যে ভাই, আপনারা আমার বড় ভাই, আপনাদের সাথে হলএ চলা ফেরা করি, আপনারা তো আমারে চিনেন, আমি আপনাদের সাথে ডিপার্টমেন্ট ও হলের অনেক খেলাধুলা করছি। নাফিস এসে তখন আমাকে বললো, “তোরে তো সোজা বললাম, তুইতো কথা শুনতেছস না রে, শিকার করস না কেন তুই”, বলে আমার তলপেটে জোর করে একটা লাথি মারে। এর সাথে সাথে সবাই আমাকে হুমড়ি খেয়ে মারা শুরু করে, লাথি, গুষি, চড় যে যা পারছে দিয়ে যাচ্ছে। আমি বার বার সরে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম, লিখন আমার এক পায়ের উপর পাড়া দিয়ে আমাকে সোফার সাথে আটকে রাখে যেন আমি না সরতে পারি।
লিম ও নাবিল আমরা চুল ধরে আমার মুখে ঘুষি ও চড় মারা শুরু করে। তারা আমাকে পর্যায় ক্রমে মেরেছিলো আর শিকার যেন দ্রুত করি এটা বলছিলো। রশিদ হলের যত ছাত্রলীগ গুন্ডা পলিটিক্যাল যা ছিলো, ঐ রাতে সবাই আমাকে কম পক্ষে একটা না একটা চড় বা লাথি দিয়েছিলো। এ ভাবে প্রাথমিক পর্যায়ে মারের পর রাত তখন মেবি ১১:০০ টার কাছাকাছি, আমাকে গেস্ট রুম থেকে ২ তালায় একটা রুমে নিয়ে রেখেছিলো কিছুখন।
ওখানেও ছাত্রলীগের সাগর ( IEM-16 ) সহ আরও ২-৩ টা শুয়ার আমাকে জিজ্ঞেসাবাদ করে এবং চড় থাপ্পড় মারে। কিছুখন পর আবার আমাকে ২ পাশ থেকে ২ জন ধরে গেস্ট রুমে নিয়ে আসে। তখন মাবিল ইইই-১২ ও লেদার ১৪ এর মাহবুবের এর আগমন ঘটে, গেস্ট রুমে। মাবিলকে সব জুনিয়র মাথায় করে রাখতো দেখতাম রশিদ হলে।
আমি ভাবলাম যে এ মনে হয় আমাকে এটলিস্ট মারবেনা, বা নিয়ে যাবে এখান থেকে। ও এসে আমাকে বললো, “শোন তরে দেখে আমার মায়া হইচ্ছিলো তাই আসছি। তুই যে শিবির করস এটা শিকার কর, তাইলে আমি বলে দিলে, এরা তোরে ছেড়ে দিবে।” আমি এটা শুনে অবাক হয়ে বুঝলাম, এ আসলে আমাকে নিতে বা বাচাঁতে আসে নাই,আসছে তার গুন্ডালীগের হাজিরা দিতে। আমি বললাম যে ভাই আমি তাবলিগ করেছি, কিন্তু শিবির তো করি না, শিকার করবো কি ভাবে। তখন ও খ্যাপে আমাকে ২-৩ টা চড় মারে।
পাশে নাবিল, লিখন, লিম, সাগর ওরা হাসছিলো এবং বলছিলো “যে ভাই এই ***** কিছু বলে লাভ নাই, ভালো মত মারতে হবে, সব ফড়ফড় করে বলে দিবে তখন।” এরপর থেকে চরম নির্যাতন শুরু হয় আমার উপর। লিখন, নাবিল, লিম, নাফিস আরো কয়েকজন (যাদের নাম মনে নেই আপাতত) গেস্ট রুমে থাকা স্টাম্প এবং ব্যাট দিয়ে নিয়ে মারা শুরু করে এ পর্যায়ে আমাকে। আমার হাতের কনুই ও পায়ের হাটু গুলো টার্গেট করে তারা একের পর এক বাড়ি দিতে থাকে। আমার চিংকার ও আত্যনাদে ঐ দিন রশিদের সভ্য কারো ঘুম হওয়ার কথা ছিলো না। তার একজন হাপিয়ে গেলে পালা বদল করে আরেকজন কাছে স্টাম্প দেয়।
২-৩ টা স্টাম্প তখন আমার উপর ভাঙ্গা হয়েছিলো। এক পর্যায়ে কান্নার মতো শক্তি ছিলো না শরীরে, শুধু গোঙ্গানোর মত শব্দ করতে পারতাম। মাঝে কিছুখন অফ দেয় মাইর তারা, তখন ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন এসেছিলো দেখতে। ও এসে জিজ্ঞেস করেছিলো, “শিকার করছে কিছু? তখন নির্যাতন কারীরা উত্তর দিয়েছিলো, “না ভাই”। তখন ও বলেছিলো, মাথা আর বুকে বাদে বাকি শরীর ঝাঝরা করে পেল।
নাভির নিচে পিটা ****টারে।” আবার শুরু হয় নির্মম পশুর নির্যাতন। অচেতন হয়েছি ২-১ বার, কিন্তু স্টাম্প দিয়ে মাথা বাড়ি দিয়ে তারা আমার চেতনা ফেরাত। চোখ ও মুখ ফুলে, ব্যাথায় আমি ঝাপসা দেখা শুরু করলাম এক পর্যায়ে। আল্লাহকে ডেকেছি গুঙ্গিয়ে গুঙ্গিয়ে।
মনে হলো এই কুয়েট ক্যাম্পাসের পুরো ৪০০০+ মানুষ বোবা ও অন্ধ। অনেকেই দেখলাম, গেস্ট রুমের দরজা দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখছে কি রঙ্গ মঞ্চ হচ্ছে। উৎসাহ নিয়ে দেখে চলে যাচ্ছে। এ রকম ভাবে আধ বা ১ ঘন্টা চলার পর আমাকে পাশের টিভি রুমে, ডিপার্টমেন্টের লেদার ১৪ এর মাহবুব নিয়ে যায় একাএকা। “ও আমাকে বলে, দেখ তুই ডিপার্টমেন্ট এর ছোট, লেদারের ভিপি ও একুশ হলের পলিটিক্যাল হিসাবে আমার একটা দ্বায়িত্ব আছে। তুই এখান থেকে গেস্ট রুমে ফিরে গেলে, ওরা তোরে যা বলবে শিকার করে নিবি, তোর কিচ্ছু হবে না। আমি তোরে এখান থেকে নিয়ে হসপিটালে যাবো। ” আমি বললাম ভাই যদি মিথ্যা না হয়, শিকার করবো ভাই।
আমাকে নিয়ে যাওয়ার পর আবার জিজ্ঞস করা হলো তুই “শিবির করস, আমি উত্তর দিয়েছিলাম না।” তখন মাহাবুব প্রচন্ড পরিমান রেগে টিভি রুমে একটা টি স্কেল ছিলো, ওটা দিয়ে মারা শুরু করে। যারা টি স্কেল চিনে তারা জানবে ওর উপরে টি এর মত মাথাটার ২ পাশে চোখা থাকে। ওটা দিয়ে আমার পিঠের কয়েক জায়গার চামড়া উঠে যায়। এবং এক পর্যায়ে পুরো টি স্কেলটা ভেঙ্গে যায়। তখন ও লিখন সহ বাকিদের বলে এই ***** সহজে শিকার করবেনা, পিটা এরে, যাস্ট বাচাঁয়া রাখবি।
তখন তারা আমাকে আবার হিংস্রতার নতুন পর্যায়ে, রডের পাইপ, স্টাম্প ও ব্যাট দিয়ে মারা শুরু করে, আমি হাত দিয়ে যতটুকু সম্ভব প্রতিহত করার ট্রাই করি। লিখন তখন খুব রেগে যায়। “ও ১৭ ব্যাচের কাউকে ওর্ডার দেয়, একটা রশি নিয়ে আসতে। ” এর পর ২-৩ জন মিলে আমাকে জোর করে আমার হাত ও পা গুলো পিঠের পিছনে দিয়ে রশি দিয়ে জোর করে বাঁধা হয় যেন আমি হাত পা না নাড়াতে পারি, ওই রশির বরাবর রক্ত জমার দাগ আমার হাতে ১ মাস ছিলো।
আমাকে এভাবে মেঝেতে শুইয়ে দেয়া হয়। এরপর হাতের কনুই, পায়ের হাটু, টাকনু ও পায়ের পাতা ও পায়ের মাংস গুলো বরবার মারা শুরু করে। আমি ৫ বছর পর এখন ও ৩০ মিনিটের বেশি টানা হাটলে আমার পায়ের হাটু ও মাংসপেশি ব্যাথা করে। এই অকথ্য নির্যাতনের মাঝে মধ্যে বিভিন্ন হলের ছাত্রলীগের সাপোটাররা এসে আমাকে দেখতো এবং লাথি মেরে যেতো ওই মারের মধ্যে। আমি কান্নার ভাষা হারিয়ে পেলেছিলাম। মনে হচ্ছিলো মারা যাবো হয়তো আজকে রাতে। ছোট ভাইয়ের কথা বারবার মনে হচ্ছিল, ও তখন ক্যাম্পাসে এসেছিলো ঘুরতে, আমার মেসে সে। ওরা আমাকে মেরে বাসার ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিলো। মনে হচ্ছিলো ওর গায়ে যদি হাত দেয় তাহলে বেঁচে থাকলে ও বাবা মাকে কি বলবো।
এই নির্যাতন পর্যাক্রমে রাত ২.০০ পর্যন্ত চলে, আমার কাছে মনে হচ্ছিল এ আমার জীবনের দীর্ঘতম রাত। এতিমের মত কারো সাহায্য ছাড়াই হয়তো এ দুনিয়া ত্যাগ করা লাগবে। ২ টার দিক তারা যখন আমাকে বাধ্য না করাতে পেরে ব্যার্থ হলো। কুয়েট মেডিক্যালের এম্বুলেন্স আনা হলো হলের সামনে। আমি দেখে মনে করলাম, আল্লাহ আজকে রাতে আমার হায়াত রেখেছেন৷ এই খুনিদের বিচার দেখানোর জন্য আমকে বাঁচায়া রাখবেন মনে হয়।
২-৩ জন মিলে আমাকে টেনে হ্যাচড়ে এম্ভুলেন্সে তুললো, বসতে পারছি না, স্টিলের থান্ডা একটা বেডে শুইয়ে দিলো। সারা শরীর ব্যথা, প্রচন্ড পানির পিপাসা। পানি চেয়েছিলাম মাইরের সময় দেয় নাই, লাথি দিয়েছে উল্টা। ৫ মিনিট পর আরেক ডিপার্টমেন্ট সিনিয়রের আগমন, তরিকুল ইসলাম তিলক(LE-14)। ও এসেই এম্নুলেন্সে দরজায় দাড়িয়ে বাকিদের বললো, “এই ******টারে বাচায়া রাখছোস ক্যান এখনো।” তখনই শুনলসম তারা বলাবলি করছে, ভাই এরে “খুলনায় টর্চার সেলে নিয়ে যাবে বলছে শোভন ভাই।
এরে মেরে কথা বের করা যাচ্ছে না।” আমি শুনে ভয়ে আতকে গেলাম, কান্না শুরু করলাম আল্লাহর কাছে। তিলক তখন একা এম্বুলেন্সে উঠে দরজা বন্ধ করে দিলো। সামনে শুধু এম্বুলেন্সের ড্রাইভার। ও আমার চুল ধরে টেনে আমাকে বসালো। বলা শুরু করলো, ” ফজলুল হক হলে আর ৩ টারে ধরে বানায়া আসলাম এতোখন, তোরে তো দেখে কম মারছে মনে হচ্ছে।” তখন আমি জানতে পারলাম যে আরো কয়েকজনকে এই পশুর মতো টর্চার করা হচ্ছে। আমাকে জিজ্ঞেস করলো, “তুই শিকার কর, শিবির করস।
আর না হলে আমরা তোরে বানানো ডকুমেন্ট দিয়া থানায় পাঠায়া দিমু।” আমি বললাম ভাই আমি তো করি না, করলে তো বলতাম ভাই, এতো মারার পর। ও এটা শুনে রেগে আমার নাকে ঘুষি দিয়েছিলো। আমার নাক ফেটে রক্ত পড়েছিলো টপ টপ করে। আমাকে এর উপর দিয়ে ৫-৭ চড় ও লাথি দিয়ে ছিলো এম্বুলেন্সের মধ্যেই। ২০ মিনিট কাটে ও ভাবে এম্বুলেন্স থেকে নামিয়ে আমাকে গেস্ট রুমে নেওয়া হয়। আমার মুখ ও চোখের পাতা ফুলে গিয়েছিলো ততখনে অনেক। চোখ খুলে রাখা কষ্ট হচ্ছিল, জোর করে চেষ্টা করছিলাম তাও।
কানের পাতা রক্তাক্ত। আবার স্টাম্প দিয়ো মারলো ১০-২০ মিনিট। ২.৩০ কি ৪০ এর দিকে তৎকালিন রশিদের প্রোভস্ট ডঃ সজল কুমার অধিকারী(সিভিল ডিপাঃ) আসেন, এবং আমাকে নিয়ে অফিস রুমে যান। লিখন, নাভিল সহ বাকিরা ওনারা সাথে অফিসে আসে। তখন উনি বলেন একে মারলে কেন, তখন তারা বললো এ শিবির, স্যার। উনি বললেন আচ্ছা একে আজকে টিচার্দের গেস্ট রুমে রাখো রাত পর্যন্ত, কালকে সকালে ভিসি স্যার বিচার করবেন, যদি এর দোষ থাকে কোন৷ ওরা তখন শোভন কে ফোন দিয়ে আনায়।
শোভন বলে,” স্যার এরে ভার্সিটির তরপ দেখে বাদি হয়ে পুলিশে দিয়ে দেন, খান জাহান আলি থানার পুলিশ রে ফোন দিয়ে নিয়ে আসছি আমি।” স্যার বললেন,” এটার এখতেয়ার তো আমার নাই, আমি স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এর পরিচালক কে ফোন দিয়ে দেখি।” তৎকালিন পরিচালক শিবেন্দ্র শেখর শিকদারকে ফোন দেয়া হয়। প্রোভস্ট স্যার বলেন “স্যার একটা ছেলে এরা মারছে, শিবির সন্দেহে, আমি বলি কি, সিকিউরিটি কর্মকর্তা সাদিক প্রামানিক আছেন, ওনার দ্বায়িত্বে আজকে রাতটা ডর্মেটরিতে রেখে, কালকে না হয় ভিসি স্যার বিচার করবেন।”
রিপ্লাই আসে ফোনের ওপাশ থেকে, “আমি এটার ডিসিশন দেওয়া কি হবে? ঘটনাতো পুরোপুরি শুনলাম না।” গুন্ডালীগ শোভন তখন বলে স্যার ফোন দেন আমাকে, “সে বলা শুরু করে, স্যার আপনারা যদি এরে এখন পুলিশে না দেন, দায়ভার কিন্তু আপনাদের নিতে হবে।” তখন ফোনে রিপ্লাই আসে, “আচ্ছা বাবা, তোমার যা ভালো হয় করো!” তখন সে রিপ্লাই বলে “আচ্ছা, স্যার তাহলে কুয়েটের পক্ষ থেকে এরে পুলিশে দিয়ে দিলাম।” রিপ্লাই এসেছিলো “ওকে।” এরপর ওরা ২-৩ জন টেনে হিচড়ে আমাকে একটা সিএনজিতে তুললো।
২ পাশে ২ জন পুলিশ বসে নিয়ে গেলো, খানজাহান আলি থানায়। ওখানে গিয়ে ভিতরে একটা টুলে বসানো হলো। অনেক কষ্ট করে আকার ইঙ্গিতে পানি চাইলাম এক কন্সটেবলের কাছে। উনি পানি দিয়েছিলো কিন্তু গলা দিয়ে ঢোক গিলা যাচ্ছিলো।
অজ্ঞান প্রায় অবস্থায়, অনেক কষ্ট করে পানি পান করেছিলাম, এক ঢোক। এক কন্সটেবল বললো স্যার,”আগের টারে হাসপাতালে (পাশে কোন হাসপাতাল) পাঠাইছিলাম, রাখে নাই, ওনারা রিস্ক নিতে চান না। মারা গেলে বেঝাল হবে তাই। এটার অবস্থা ও তো ভালো না, কি করবো?” তখন ওসি বলে, “২ টারে খুলনা মেডিক্যালে পাঠায়া দেন, সরকারি হাসপাতাল কিছু হলে সমস্যা হবে না তেমন।”
কিছুখন পর পুলিশের একটা গাড়ি আসলো। হাটতে পারি না। ২ পাশে ২ পুলিশ কাধে নিয়ে গাড়িতে উঠায়। এরপর ই জ্ঞান হারাই। মধ্যে টের পেলাম ৩ জন মিলে ধরে আমাকে সরাচ্ছে কোথাও। সকালে জ্ঞান ফিরে দেখলাম, খুলনা মেডিক্যাল এর প্রিজন সেলে আছি।
এর পর আরও কত হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, আমি, এবং আমার বাবা মাকে কোট-কাচারী, মামলা-মুকাদ্দিমা নিয়ে, তা বলতে আরো একটা পর্ব লিখতে হবে। এমনকি আমার ২ রুমমেট ও স্কুল বন্ধু, মাহাবুব রহমান (মেকা -১৭), ও আসিফুর রহমান সায়মন (ESE-17) কে একুশ হলে নিয়ে গিয়ে আমার সাথে পরিচয় কিভাবে এবং কেন এই নিয়ে এই গুন্ডালীগের ছেলেরা ২০-২৫ মিলে রাত ভর র্যাগ দিয়েছিলো পরে জানলাম।
মাঝে মধ্যে হঠাৎ আতংকে উঠি, টর্চারের কোন সিন স্বপ্নে আসলে, পরে শান্ত হয়ে, আশ্বাস পাই না আমি গেস্ট রুমে না। ৩ মাস বেড রেস্ট এ ছিলাম। পিঠ বেডে লাগাতে পারি নাই। মাথা উপুড় করে বুকে ভর দিয়ে ঘুমাতে হয়েছে। চোখ গুলো পুরো সাদা অংশ লাল হয়ে গিয়েছিলো। ৩ মাস আমার চোখে লাল আর কালো অংশ ছিলো, সাদা কোন অংশই ছিলো না রক্ত জমে।
সারা শরীরে কালচে দাগ ছিলো ৬-৭ মাস পর্যন্ত। শরীররে বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমে টিউমার মতো মাংস পিন্ড হয়েছে। ২.১ এ কোন মতে পরিক্ষা দিয়েছি। লগ খেলাম যা আমার পরের ৩ বছর ধরে গ্লানি ভরে টানা লাগছে, রেজাল্ট এর গ্লানি মেবি টানবো সারাজীবন। ক্যাম্পাসে যাতায়ত করতাম আসামীর মতো, সবাই একঘরে করেছিলো এক প্রকার। আর ক্লাসমেট ছাত্রলীগের চ্যালাদের উক্তততা তো ছিলোই। ৪.২ এর রেজাল্ট পেয়ে এক দীর্ঘ নিশ্বাঃস ছেড়েছিলাম, যে এ দুনিয়াবি জাহান্নাম-১০১ একর থেকে মুক্তি আমার, আলহামদুল্লিলাহ।
I believe that is one of the most vital information for me. And i am satisfied studying your article. But want to statement on some general issues, The web site taste is great, the articles is in point of fact great : D. Excellent process, cheers
Hello, all is going sound here and ofcourse every one is
sharing facts, that’s gebuinely excellent,
keep up writing. http://Boyarka-Inform.com/
Hello there! This post could not be written any better! Reading this post reminds me of my good old room mate! He always kept chatting about this. I will forward this post to him. Fairly certain he will have a good read. Many thanks for sharing!
Yay google is my world beater assisted me to find this great website ! .
7, the risk of a borderline tumor was substantially higher than that expected on the basis of rates in the general population of women age- standardized incidence ratio, 3 cialis with priligy darunavir, artemether
Yesterday, while I was at work, my cousin stole my iphone and tested to see if it can survive a forty foot drop, just so she can be a youtube sensation. My apple ipad is now broken and she has 83 views. I know this is entirely off topic but I had to share it with someone!
A code promo 1xBet est un moyen populaire pour les parieurs d’obtenir des bonus exclusifs sur la plateforme de paris en ligne 1xBet. Ces codes promotionnels offrent divers avantages tels que des bonus de dépôt, des paris gratuits, et des réductions spéciales pour les nouveaux joueurs ainsi que les utilisateurs réguliers.code 1xbet télécharger